Header Ads

Header ADS

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ , উল্লেখযোগ্য কারণ, ঘটনা, সংক্ষিপ্ত ইতিহাস

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ , উল্লেখযোগ্য কারণ, ঘটনা, সংক্ষিপ্ত ইতিহাস












      দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় কয়েকটি বিমান

কিভাবে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরু হয়েছিল। প্রথম বিশ্বযুদ্ধ শেষ হওয়ার প্রায় দুই দশক পর শুরু হয়েছিল এক ভয়ঙ্কর বিশ্বযুদ্ধ যা আগের সকল যুদ্ধকে ছাড়িয়ে যায় এ যুদ্ধটিকে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ নামকরণ করা হয় এটি একটি বৈশ্বিক যুদ্ধ।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরু হয়েছিল ১ সেপ্টেম্বর ১৯৩৯ সাল এবং দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শেষ হয়েছিল দুই সেপ্টেম্বর ১৯৪৫ সাল এই যুদ্ধটি স্থায়ী ছিল ছয় বছর একদিন। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ ছিল এতটাই নিঃসংশ যে এ যুদ্ধে প্রায় ৫ থেকে ৮ কোটি মানুষ মৃত্যুবরণ করে সকল পরিসংখ্যান থেকে জানা যায় যে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ হয়েছিল পৃথিবীর সবচেয়ে নিঃসংসতম যুদ্ধ। এ যুদ্ধে বিভিন্ন দেশ তাদের আবিষ্কৃত নতুন নতুন প্রযুক্তির ব্যবহার করতে থাকে বিভিন্ন স্থানে ব্যাপক বিমান যুদ্ধ হতে থাকে।




দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে ৩০ টি দেশ অংশগ্রহণ করে এবং এ যুদ্ধে ১০ কোটিরও বেশি সৈন্য অংশগ্রহণ করেছিল। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে পৃথিবীর বিভিন্ন জায়গায় গণহত্যার শিকার হয় মানুষ দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের শুরুটি হয়েছিল জার্মান নাৎসি বাহিনীর পোল্যান্ড অভিযান কে কেন্দ্র করে তারপর সারা পৃথিবীব্যাপী এই যুদ্ধ বিস্তৃতি লাভ করে জার্মানির পোল্যান্ড অভিযান শুরু হয়েছিল 1 সেপ্টেম্বর 1939 সালে। জার্মানির পোল্যান্ড অভিযান কে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের শুরু বলে বিবেচনা করা তবে জার্মানির পোল্যান্ড অভিযানের পূর্বেই বিভিন্ন দেশের মধ্যে আঞ্চলিক অস্থিতিশীলতা বিরাজ করছিল এবং পৃথিবী বিভিন্ন জায়গায় সংঘর্ষের মতো ঘটনা ঘটছিল। প্রথম বিশ্বযুদ্ধে অক্ষশক্তি হেরে যায় জার্মানি ভার্সাইচুক্তি করে এ যুক্তিটি ছিল জার্মানির জন্য অপমানজনক এই চুক্তিতে জার্মানির উপর বিভিন্ন ধরনের বিধি নিষেধ আরোপ করা হয় ফলে জার্মানির জনগণ এ চুক্তির বিরুদ্ধে ছিল এ চুক্তি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের অন্যতম কারণ। প্রথম বিশ্বযুদ্ধ শেষ হওয়ার পরই এ ধরনের যুদ্ধ যাতে না ঘটে তাই গঠিত হয় লিগ অফ নেশন কিন্তু লিগ অফ নেশন এর যুদ্ধ থামাতে ব্যর্থ হয় পরবর্তীতে জাতিসংঘ গঠন করা হয়।






দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ যুদ্ধ শেষ হওয়ার পরেই সারা পৃথিবীর রাজনৈতিক পরিস্থিতি সম্পূর্ণ পরিবর্তিত হয়ে গিয়েছিল। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের মতো ভয়াবহ যুদ্ধ এর পূর্বে কখনো সংঘটিত হয়নি সেই সময়ে পৃথিবীর বেশিরভাগ রাষ্ট্র এ যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছিল প্রথম বিশ্বযুদ্ধের মত এ দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে ও দুটি সামরিক জোট সৃষ্টি হয়েছে এবং প্রথম বিশ্বযুদ্ধের মত দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে জার্মানি ব্যাপকভাবে অংশগ্রহণ করে । প্রথম বিশ্বযুদ্ধের মত দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের দুটি সামরিক জোটকে অক্ষশক্তি এবং মিত্রশক্তি নামকরণ করা হয় অক্ষশক্তির নেতৃত্বদানকারী রাষ্ট্রগুলো হল জার্মানি, জাপান, ইতালি, বুলগেরিয়া ও রোমানিয়া। মিত্রশক্তির পক্ষের নেতৃত্বদানকারী রাষ্ট্রগুলো হলো সোভিয়েত ইউনিয়ন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও চীন প্রজাতন্ত্র।দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে নেতৃত্বদানকারী দেশ সমূহ ছাড়া তাদের অধিকৃত অঞ্চল এবং অনেক সহযোগী শক্তি এ যুদ্ধে অংশগ্রহণ করে।

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে অক্ষশক্তির নেতৃত্ব দিচ্ছিলেন তাদের মধ্যে জার্মানিকে নেতৃত্ব দিচ্ছিল নাৎসি বাহিনীর প্রধান এডলফ হিটলার, জাপানের সম্রাট হিরোহিতো, ইতালিতে বেনিতো মুসোলিনি এবং মিত্রশক্তির নেতৃত্ব দান করছিলেন সোভিয়েত ইউনিয়নের জোসেফ স্টালিন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ফ্রাঙ্কলিন ডি. রুজভেল্ট, যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী উইনস্টন চার্চিল ও চীন প্রজাতন্ত্রের চিয়াং কাই-শেক।

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে মিত্রশক্তির এক কোটি ৬০ লাখের বেশি সামরিক সদস্য মৃত্যুবরণ করে বেসামরিক মানুষের মৃত্যুর সংখ্যা ছিল চার কোটি 50 লক্ষের বেশি মিত্রশক্তির সর্বমোট প্রাণহানির সংখ্যা ছিল ছয় কোটি ১০ লক্ষেরও বেশি এবং অক্ষশক্তির ৮০ লক্ষের বেশি সামরিক সদস্য মৃত্যুবরণ করে বেসামরিক মৃত্যুর সংখ্যা ৪০ লক্ষের বেশি এবং সর্বমোট প্রাণহানি এক কোটি ২০ লক্ষের চেয়ে বেশি। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় জার্মানিতে ইহুদীরা হলোকস্টের শিকার হয়।

এটি ছিল পৃথিবীর একমাত্র যুদ্ধ যেখানে পারমাণবিক বোমা বিস্ফোরণ করা হয়েছিল। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে অন্যতম শক্তিশালী সাম্রাজ্য ছিল জাপান  সাম্রাজ্য তার নিজের অঞ্চল বৃদ্ধি করার জন্য পূর্ব এশিয়া মহাদেশ জুড়ে আক্রমণ চালায় চীনে ব্যাপক গণহত্যা চালায় চীনের অনেক অঞ্চল তাদের নিজেদের কব্জায় নিয়ে নেয় এছাড়াও ফিলিপাইন মায়ানমার ইত্যাদি দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার অনেক দেশ তারা নিজেদের দখলে নেয়। জাপান নিজেদের আক্রমণ বৃদ্ধি করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নৌ এবং বিমান ঘাঁটি পার্ল হারবারে আক্রমণ চালায় ফলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনীর ব্যাপক ক্ষয় ক্ষতি হয় অনেক সেনা সদস্য মৃত্যুবরণকারে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র জাপানের বিরুদ্ধে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে অংশগ্রহণ করে । 

জাপানের এসব কর্মকাণ্ডের ফলস্বরূপ জাপানকে যুদ্ধ থেকে থামাতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র জাপানের হিরোশিমা এবং নাগাসাকি শহরে দুটি পারমাণবিক বোমাবর্ষণ করে।তখন মানুষের পারমানবিক বোমা সম্পর্কে কোন ধারণা ছিল না। ৬ই আগস্ট ১৯৪৫ ভোরবেলা জাপানের হিরোশিমা শহরের আকাশেও ছিল মার্কিন বিমান বাহিনীর একটি বিমান বিমানটি থেকে একটি পারমাণবিক বোমা লিটল বয় হিরোশিমা শহরের উপর ফেলা হয় নিমিষেই শহরটি একটি ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয় এবং এরপর ৯ আগস্ট 1945 সাল আরেকটি পারমাণবিক বোমা ফ্যাট বয় জাপানের নাগাসাকি শহরে ফেলা হয় এবং এ শহরটিও তৎক্ষণাৎ ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়। 


অনুমান করা হয় হিরোশিমা শহরে পারমাণবিক বোমা বিস্ফোরণের ফলে মৃত্যু হয় এক লক্ষ ৪০ হাজার মানুষের এবং নাগাসাকি শহরে প্রায় ৭৪ হাজার মানুষ মৃত্যুবরণ করে। কিন্তু এখানেই থেমে থাকেনি মৃত্যুর সংখ্যা পরবর্তীতে পারমাণবিক বোমার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ায় সৃষ্ট বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে ২ লাখ ১৪ হাজার মানুষের মৃত্যু হয়। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের হিরোশিমা ও নাগাসাকি শহরে পারমাণবিক বোমা বিস্ফোরণের পরপরই জাপান আত্মসমর্পণ করে। জাপানের আত্মসমর্পণের পূর্বেই জার্মানি ও আত্মসমর্পণ করে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শেষ হওয়ার পরেই লীগ অফ নেশন ব্যর্থ হওয়ায় নতুন করে জাতিসংঘ গঠন করা হয়।

No comments

Theme images by piskunov. Powered by Blogger.